যদি আজ ইসলামী চিন্তা ধারায় থাকতাে পর্দা করতাে হয়তাে এ অশান্তিটি হতাে না। কে জানে? স্মৃতি পর্দার আড়ালে রয়েছে যে, দুশচরিত্র, জঘন্যতম যৌন খেলা, অন্ধকার জীবন, স্মৃতি তার স্বামীকে অফিসিয়াল ট্যুরের কথা বলে প্রায়ই ধনাঢ্য লােকদের সঙ্গে লংট্যুরে চলে যায়। একজন পুরুষে তার কখনাে তৃপ্ত হয় না।
এ কারণে সে ঘন ঘন বাসা বদলাতে থাকে। স্মৃতিকে নিয়ে যেতে প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর অত্যাধুনিক মডেলের গাড়ি অপেক্ষা করে তার অফিসের নিচে । তার এসব জীবনাচরনের কথা জানতে পেরে স্মৃতি দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে দু-দু’বার চাকুরিচ্যুত হয় । প্রতি রাতেই মাতাল হয়ে বাসায় ফিরে সে। তাকে নামিয়ে দিয়ে যায় অত্যাধুনিক গাড়ি । তার অসৎ চরিত্রের কর্মকাণ্ড এলাকাবাসীর নজরে পড়ে ।
কিন্তু তা এলাকায় ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ার আগেই বাসা পাল্টিয়ে ফেলে। সে যখন নিজ পারিবারিক বাসাতে থাকতাে সে তখন থেকেই এ অশালিন চলাফেরা করতাে । মাঝে মধ্যে অপরিচিত লােকজন নিয়ে বাসায় উঠতাে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে বলতাে এরা সাংবাদিক। স্মৃতি সাংবাদিক নাম দিয়ে চলতাে । সে সাংবাদিক হওয়ায় পরিবারের লােকজন তার ভয়ে কথা বলতাে না ।
রাশেদুলের বাসায় থাকাকালীন উচ্ছঙ্খলভাবে চলাফেরা করতাে । কাউকে তােয়াক্কা করতাে না । রিতা ও তার দুই সন্তানও তার ভয়ে তার কাছে যেত না ।। মায়ের এ অশান্তি দেখে পাবন ও পায়েলের শিশু-কিশাের হৃদয়ও দারুনভাবে নাড়া দেয়। তাদের অনেক প্রশ্ন উকি দেয়। কেন আমার মায়ের এতাে দুঃখ কষ্ট? কেন বাবা আমাদের মায়ের কাছে আসে না? কেন আমাদেরকে ভালবাসে না। বাবা ও আমাদের মধ্যে কিসের বাধা হয়ে আছে?
তাদের মনের শত প্রশ্ন আর বুকে চেপে রাখতে পারেনি। পরপর মায়ের কাছে ব্যক্ত করতে থাকে । জানতে চায় তাদের প্রশ্নের জবাব । তারা এখন কিশাের বয়সে পা রেখেছে, বুঝতে শুরু করেছে অনেকটাই। তাদের মা রিতা ধীরে ধীরে ওদের প্রশ্নের উত্তর দিতে থাকে। তাদেরকে এও জানিয়ে দেয়া হয় তাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করেছে। তার সংসারের অশান্তির একমাত্র কারণ তাদের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী স্মৃতি ।
সে তােমাদের বাবাকে খেয়েছে। তাদের নানা প্রশ্নের জবাব দিয়ে না 6ি কাটিয়ে যাচ্ছে সময়। রিতার শ্বশুর শাশুড়িও তেমন খবর নিচ্ছে , হয়তাে এ কারণে, রিতার বিয়ে হয়েছে রাশেদুলের সাথে প্রেম করে । পাবন ও পায়েলের শত প্রশ্নের এরকম একটি প্রশ্ন করে বসলাে যে, আ আমাদের দাদাতাে একজন সাংবাদিক। মানুষের অনেক দুঃখ কষ্টের কথা লিখে থাকেন পত্রিকার পাতায়। মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করার আবেদন করে থাকেন সরকারের কাছে, জনগণের কাছে।
আমাদের এতাে দুঃখ সম লাগবের জন্য কিছু লিখতে পারেন না? তিনি কি দেখেন না আমাদের দুঃখ-বেদনা? বাবা ও ঐ স্মৃতি নামের মহিলাটির শয়তানির কথা লিখতে পারেন না? সরকার ও আইনের কাছে বিচার চাইতে পারেন না? এ অশান্তির লােমহর্ষক আগুনে আর কত দিন বেঁচে থাকা যায়; লাঞ্চনা গঞ্জনার প্রতিবাদের ভাষা ভুলে গেছে রিতা । এত অপমান মানুষের সামনে। চোখ খােলার যেন সুযােগ নেই ।
বের হওয়ারও যেন পথ নেই, সব দরজা। বন্ধ হয়ে আছে। অন্যদের পারিবারিক তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের শেষ নেই। এসব। অপমানের শেষ সীমানায় পৌছে গেছে। তার থেকে মুক্তির রাস্তা সব হারিয়ে ফেলেছে। তার থেকে বাচার কোনাে পথ নেই। কোনাে দিক আর খোঁজে পাচ্ছে না। সামনে শুধু অন্ধকার দেখে রিতা । হা এসব কঠিন মুহূর্ত অশান্তি থেকেও বাচার পথ আছে। তবে সঠিক জায়গা খোঁজ করতে হবে। আগুনে খোঁজ করলে মুক্তির পথ পাওয়া যাবে। খোঁজ করতে হবে শান্তির জায়গা ইসলামে। সেখানে আছে চির শান্তির পথ, চির মুক্তির পথ ।
তবে রিতা সেখানে খোঁজ করেনি। খোঁজ করেছে আগুনে। তাই পেয়ে গেছে এক অভিশপ্ত রাস্তা, তা হলাে শয়তানের দেখানাে পথ আত্নহনন । রিতা মনে করেছে আত্মহত্যাই একমাত্র লাঞ্ছনা গঞ্জনার প্রতিবাদের ভাষা । অপমান ও অশান্তি থেকে বাচার একমাত্র উপায় । আসলে এটা কি মুক্তির পথ? না, এটা চির জাহান্নামের পথ, অশান্তির স্থান ।